কোলকাতা:- ঘরের মাঠে আরও একবার চাপের মুখে জ্বলে উঠল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। এই ম্যাচে তারা চাপের মুখে পড়লেও, শেষবেলায় রডরিগসের গোল বাগান সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটায়। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) কলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল মেরিনার্সরা। এই ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। মোহনবাগানের হয়ে একটি করে গোল করলেন জেমি ম্যাকলারেন, জেসন কামিংস এবং রডরিগস। তবে কেরালার হয়ে একটি করে গোল করলেন জেমেনেজ এবং দ্রিনসিচ।
লড়াই করো হার না মানা, এটাই আমাদের সংকল্প! এগিয়ে চলবো একসঙ্গে 💚♥️
Watch #MBSGKBFC LIVE only on @JioCinema, @Sports18-3, #StarSports3 #MBSG #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন pic.twitter.com/j51qUHkcMo
— Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg) December 14, 2024
এই ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে শুরু করে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ৩৩ মিনিটে তারা ১-০ গোলে এগিয়ে যায়। গোল করলেন জেমি ম্যাকলারেন। প্রথমে আশিস রাই টার্গেটে শট মারলেও, সচিন সুরেশের রক্ষণে তা প্রতিহত হয়। তিনি বলটা তালুবন্দি করার পরিবর্তে ঠেলে দেন সামনের দিকে। ব্যাস, আর কী! একেবারে পায়ের সামনে বলটা পেয়ে যান জেমি ম্যাকলারেন। তিনি কোনও ভুল করেননি। প্রথমে ম্যাকলারেন বলটাকে ট্যাপ করেন এবং কার্যত ফাঁকা গোলেই সেটা তিনি ঠেলে দেন। আর সেইসঙ্গে গর্জে ওঠে গোটা যুবভারতী স্টেডিয়াম।
কিন্তু, ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতে না হতেই গোটা ছবিটা একেবারে বদলে যায়। ৫১ মিনিটে ব্লাস্টার্স ব্রিগেডের হয়ে সমতা ফেরালেন জিমেনেজ। ফ্রেডি এবং জিমেনেজের সাঁড়াশি আক্রমণে সাজানো বাগান একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশাল কাইথ প্রথমে শুভাশিসকে লক্ষ্য করে পাস বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি বলের দখল হারিয়ে ফেলেন। এরপর বাগানের রক্ষণে চাপ বাড়াতে শুরু করেন ফ্রেডি। অবশেষে জিমেনেজের শট কার্যত গোলার মতো মেরিনার্স দূর্গে আছড়ে পড়ে। ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ১-১। ৬২ মিনিটে মোহনবাগানের সামনে গোল করার একটা দারুণ সুযোগ এসেছিল। মাঝমাঠে বল দখল করেছিলেন পেত্রাতোস। তিনি বলটা নিয়ে ফাইনাল থার্ডে আসেন। তাঁর ডানদিকে ছিলেন ম্যাকলারেন, বাঁ দিকে লিস্টন কোলাসো। অবশেষে তিনি কোলাসোকেই বলটা বাড়ান। কোলাসো গোলমুখী শট নেন। কিন্তু, নজরকাড়া সেভ করলেন সচিন সুরেশ।মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে কেরালা ব্লাস্টার্সের সামনেও। সাদাউইকে লক্ষ্য করে একটি দুরপাল্লার শট মারেন নোয়াচা। সাদাউই বলটাকে পায়ে নিয়ে প্রথমে আশিস রাইকে টপকে যান। এরপর টম অলড্রেডের পায়ের ফাঁক দিয়ে জোরাল শট মারেন তিনি। কিন্তু, বিশালের রক্ষণ তিনি প্রতিহত করতে পারলেন না। মোহনবাগানকে আরও একবার নিশ্চিত লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলেন কাইথ।৭৭ মিনিটে বড় ধাক্কা খেল মেরিনার্সরা। বাগানের গোলকিপার বিশাল কাইথ বলটা থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, দ্রিনসিচ তাঁর থেকে বলটা কার্যত কেড়ে নিলেন। এরপর বাগানের জালে তিনি বলটা জড়িয়ে দেন। প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েও লিড নেয় কেরালা। গোটা যুবভারতীতে একরাশ নিস্তব্ধতা নেমে আসে।তখনও অবশ্য চমক বাকি ছিল। একটা সময় সবাই মনে করছিলেন যে এই ম্য়াচে হয়ত ড্র করেই ফিরতে হবে মোহনবাগানকে। ঠিক সেইসময় দেখতে পাওয়া গেল রডরিগস ম্য়াজিক। ৯০+৫ মিনিটে কেরালার ডিফেন্স বলটা বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করলেও রডরিগসের হাফ-ভলি যাবতীয় হিসেব বদলে দেয়। ফের গর্ডে ওঠে কলকাতা বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। এগিয়ে যায় মেরিনার্সরা। এরপর কেরালার কাছে এই ম্য়াচে ফেরার মতো আর সময় ছিল না। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে টানা চার ম্য়াচে জয়লাভ করল মোহনবাগান। সেইসঙ্গে ১১ ম্য়াচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে আরও একবার তারা লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠে এল।