প্রিয়াংশু:কোল পামারের পাস থেকেজোরালো শটে ডাচ গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে তিনি বল জালে জড়াতেই উৎসব শুরু হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ডাগআউটে। সম্পূর্ণ অজানা এক ব্যক্তি থেকে ইংল্যান্ড সমর্থকদের নায়ক হয়ে ওঠেন ২৮ বছরের অলি ওয়াটকিন্স। ইপিএল যাঁরা নিয়মিত দেখেন না, তাঁদের কাছে এই ধরনের শটে অলির গোল সত্যিই বিস্ময়কর। কিন্তু ইংল্যান্ডকে ইউরোর ফাইনালে তোলার পরে অলির ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা তাঁর বেশ কয়েকটি গোলের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দেয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, ক্লাবের হয়েও এ রকমএকাধিক গোল করেছেন ওয়াটকিন্স। কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের সেই আন্দাজ ছিল। তাই অধিনায়ক হ্যারি কেনের পরিবর্তে অ্যাস্টন ভিলারস্ট্রাইকারকে নামিয়ে দেন। দেশের জার্সিতে তাঁর প্রথম গোলটি যে ইংল্যান্ডকে টানা দ্বিতীয় বার ইউরোর ফাইনালে তুলে দেবে, তা কল্পনাও করেননি ওয়াটকিন্স। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে পামারকে তিনি বলেছিলেন, “তোমার পাস থেকেই আজ আমি গোল করব।” ম্যাচের ৯০ মিনিটে সেটাই ঘটে। পামারের পাস থেকেই গোল করে ইংল্যান্ডকে ২-১ এগিয়ে দেন ওয়াটকিন্স। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, “গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অপেক্ষা করছিলাম এই মুহূর্তটার।সন্তানদের নামে প্রতিজ্ঞা করে বলছিlআমিlআমি পামারকে বলেছিলাম, আমরা একসঙ্গে নামছি, তুমি আমায় গোলের পাস বাড়াবে।ওয়াটকিন্সের পরিকল্পনা সফল হয়। তাতেই আরও খুশি অ্যাস্টন ভিলার ফুটবলার। আরও বলেন, ‘যা ভেবেছিলাম, তা-ই হয়েছে। এই কারণেই আমি বেশি খুশি হয়েছিলাম। পামার বল ধরতেই বুঝে গিয়েছিলাম ও পাসটা আমাকে দেবে। তাই দ্রুত জায়গায় পৌঁছে যাই। ফাইনালে স্পেনের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা। নিঃসন্দেহে ওরা দারুণ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। সেরাটা দিতে না পারলে জেতা সম্ভব নয়। যাই হয়ে যাক, ট্রফি হাতছাড়া করছি না।ইউরোয় ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হলে দলের প্রত্যেক সদস্যকে হুডখোলা বাসে করে ঘোরানো হবে। লন্ডনের রাস্তায় প্যারেড শেষে বাকিংহাম প্যালেসে রাজা চার্লসের আতিথেয়তাও পাবে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। তার আগে বার্লিনে গিয়ে গ্যালারিতে বসে ইউরোর ফাইনাল দেখার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার।ইংল্যান্ড ফাইনালে উঠলেও সাউথগেটকে নিয়ে সমালোচনা শেষ হয়নি। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন ডিফেন্ডার রিয়ো ফার্ডিনান্ড জানিয়েছেন, ফাইনালে হ্যারি কেনকে খেলালে ভুল করবেন কোচ। তিনি বলেছেন, “একটার পর একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিলেও সাউথগেট দলকে কিন্তু ফাইনালে তুলেছে। এখনও বলব, হ্যারি কেনকে খেলানোর কোনও যুক্তি নেই। ওয়াটকিন্স যে জায়গায় বলের জন্য পৌঁছে গিয়েছিল, কেন কিন্তু পারত না। স্পেনের বিরুদ্ধে গতি প্রয়োজন। কেনের মতো মন্থর স্ট্রাইকারকে খেলালে কিন্তু ইংল্যান্ডকে ভুগতে হবে। ওয়াটকিন্স আছে, ইভান টোনি আছে। ওরা কেউ খেলুক।”সাউথগেট যদিও বাইরের কথায় আর কান দিচ্ছেন না। তিনি বলেছেন, “কী ভাবে জিতছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা ফাইনালে। ইউরো জেতার হাতছানি আমাদের সামনে। আশা করছি, এ বার ট্রফি হাতছাড়া হবে না।” যোগ করেন, “শেষ বার টাইব্রেকারে হেরেছিলাম। এ বার টাইব্রেকার আমাদের শক্তি। নিঃসন্দেহে স্পেন ভাল ফুটবল খেলছে। আমরাও কাঙ্খিত জয় পাচ্ছি। রবিবারই দেখা যাবে কারাএগিয়ে, কারাই বা পিছিয়ে।” বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ড শিবিরে ফুরফুরে মেজাজ। পুলে সাঁতার কেটেই তরতাজা হন বুকায়ো সাকারা।