কলকাতা:- ভারত ও ফুটবলের ইতিহাস একে অপরের সঙ্গে পরিপূরক কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় ফুটবলের হাল বেহাল। একসময় এশিয়ার অন্যতম ফুটবল প্রতিভার দেশ ভারত আজ নিজেকে একেবারে টেবিলের নিচে খুঁজে পাচ্ছে এবং এর সমস্ত দায় সমর্থকরা তুলে দিচ্ছে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের উপর। রাজ্য ফুটবল সংস্থা কিংবা জেলা ফুটবল সংস্থা সবার টার্গেটেই এই মুহূর্তেই ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে। এই সমস্ত কিছুর মাঝেই জল্পনা উসকে দিয়ে ময়দানে আবারও হট টপিক ফেডারেশনের সভাপতি। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, সভাপতির পথ থেকে সরে যেতে পারেন তিনি। ফেডারেশন সভাপতি মেয়াদ শেষ হতে এখনো হাতে গুনে প্রায় দু বছর পড়ে রয়েছে কিন্তু তার আগেই এমন ধরনের সিদ্ধান্ত তবে কি টনক নড়িয়েছে ভারতীয় ফুটবল মহলে? অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে নেপথ্যে রয়েছে কোন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এমনকি কল্যাণের বিরুদ্ধে অনাস্থার কথাও জানাচ্ছেন তারা!
এখনো নিজের কন্ট্রাক্টে বাকি, প্রায় দু বছর কিন্তু তার আগেই ফুটবলের বাতাসে কল্যাণ এর সরে যাওয়ার ঘটনা বেশ আকস্মিক। ইতিমধ্যেই বহু রাজ্য সংস্থা এবং জেলা সংস্থার আধিকারিকরা কল্যাণ চৌবে কে নিয়ে খুশি নন, বারংবার ফেডারেশনের কাছে তারা এই বিষয়টিকে নিয়ে দারস্ত হয়েছেন কিন্তু সদুত্তর পাননি।
রাজ্য ফুটবল সংখ্যাগুড়ি তরফ থেকে জানা যাচ্ছে বেশ অনেকগুলো ফুটবল সংস্থায়ী কল্যাণের বিরুদ্ধে অনাস্থা জারি করে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি ফেডারেশনে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠাতে পারেন এবং সেই মারফত ফেডারেশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তবে বহু বিশেষজ্ঞদের মতে কল্যান চৌবের প্রতি অনাস্থ্যার পেছনে রয়েছেন এক বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যার সম্পর্ক ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গেও রয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কথা এলে তিনি একসময় ভারতীয় ফুটবলের সংস্থায় জড়িত ছিলেন। পূর্ববর্তী সভাপতি প্রফুল্ল পাটেল কে সরিয়ে যখন কল্যাণ সভাপতি পদে বসেন তারপর থেকে বর্তমান অব্দি ভারতীয় ফুটবলে তেমন কোন উন্নতি দেখা যায়নি। তা নিয়েই রাজ্য ফুটবল ফেডারেশন গুলি কিছুটা হলেও বিক্ষিপ্ত রয়েছে। ২০৪৭ সালে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন, এই নিয়েই ছিল কল্যাণের পথচলা শুরু তবে বারংবার সেই নীতিকে ঘিরেই প্রশ্ন তুলেছেন ভারতীয় সমর্থক থেকে রাজ্য ফুটবল সংস্থাগুলি। রেফারিং বিতর্ক থেকে উন্নতমানের পরিকাঠামো থাকা এছাড়াও ফিক্সিং প্রক্রিয়া এইসবের মাঝে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ঠিক পর্যালোচনা করেনি বলেই বিরক্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য ফুটবল সংস্থা।
মোট ৩৬ টি রাজ্য ফুটবল সংস্থা সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিমকোর্টে কেস করেছে যার পরবর্তী শুনানি দিন ১১ই ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ উল্লেখ্য বিষয় আদালতে যদি জরুরী ভিত্তিক তাৎপর্য এই বিষয়টিকে নিয়ে ডাক দেওয়া হয় তবে সভাপতি পদকে ঘিরে ভোটের পরিবেশ দেখা যেতে পারে। তবে বিকল্প পথ রয়েছে ইতিমধ্যেই কল্যাণ চৌবে নিজেও সেই রাজ্যসংস্থা গুলির সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন।
নিজের গদি বাঁচাতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন ফেডারেশন সভাপতি। তবে নেপথ্যের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ক্ষমতার সামনে কতদিন মসনদে বসতে পারবেন কল্যান সে বিষয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থাকছে!