কলকাতা:- চেন্নাই এর বিরুদ্ধে ম্যাচে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের পরে গতকাল নিজেদের ক্লাব তাঁবুতেই বকেয়া বেতনের দাবিকে ঘিরে আলোচনায় বসেছিল মহামেডান কর্তৃপক্ষ। চেন্নাই ম্যাচের আগের অনুশীলনে বহু খেলোয়াড় বেতন না পাওয়ার দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়ে অনুশীলনে উপস্থিত হয়নি বলেই খবর ছিল। সেইমতো সংবাদ করেছিল বিভিন্ন কলকাতার সংবাদ মাধ্যম কিন্তু সেখানেই যেন আপত্তি সাদা-কালো ইনভেস্টারদের। গতকাল নিজেদের ক্লাব তাবুতে বেতন বকেয়ার সংবাদ ভুল এবং ষড়যন্ত্র বলে সংবাদ মাধ্যমকে কাঠগড়ায় নিয়ে গেছেন শ্রাচি- বাঙ্কারহিল ।
মোহামেডান ক্লাবের খেলোয়াড়রা তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য বেশ কিছুদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের দাবির সুষ্ঠু সমাধান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে, ক্লাবের কর্তৃপক্ষ মিডিয়াকে দোষারোপ করেছেন এবং বলেছেন যে, মিডিয়া ভুল তথ্য প্রচার করছে, যা তাদের পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে।
মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং মিডিয়াকে দোষারোপ করেছেন। তারা বলেন, ‘‘মিডিয়া অসত্য তথ্য প্রচার করছে এবং বিষয়টিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি খেলার পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’’ ক্লাবের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, ‘‘যেহেতু বেতন পরিশোধের জন্য কিছু প্রশাসনিক ঝামেলা রয়েছে, তাই আমরা ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে মিডিয়া বিষয়টিকে বড় করে দেখাচ্ছে, যা আমাদের কাজকে আরো কঠিন করে তুলছে।’’
মোহামেডান ক্লাবের অনেক তারকা ফুটবলারদের অভিযোগ, তারা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের প্রাপ্য বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার জন্য অপেক্ষা করছেন, কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাদের কোন সদুত্তর দেয়নি।
সূত্র মারফত জানা গেছে, বাঙ্কারহিল কর্তৃক বিভিন্ন পেশাদারিত্ব কন্ট্রাক্ট শুরু হয়েছিল জুলাই মাস থেকে তবে বহু খেলোয়াড় আগস্ট মাসের মাঝ বরাবর প্র্যাকটিস শুরু করে। অর্থাৎ সেই নজীরে শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসেরই নাকি বেতন বকেয়া রয়েছে মোহামেডান তারকাদের।
এদিন মহামেডান তাঁবুতে মিটিং শেষে ক্লাবের তরফে কামারউদ্দিন বলছিলেন, “কোনও ফুটবলারের বেতন বাকি নেই। এরপরে যে ফুটবলার খেলতে রাজি হবে না, সে তার টাকা পয়সা বুঝে নিয়ে ক্লাব ছেড়ে অন্য ক্লাবে চলে যেতে পারে। ফুটবলারদের এই অন্যায় আচরণ কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না।”
তবে এর মাঝেই উঠে আসছে আরও একটি বড় খবর মোহামেডান তান্তুটে নাকি অন্তর্নিহিত ষড়যন্ত্র অনেকেই মনে করছেন ক্লাবের কারোর পক্ষ থেকে এই বিভেদ লাগানো হয়েছে। মোহামেডান সমর্থক থেকে ক্লাব কর্তৃপক্ষ চিন্তিত এ বিষয়টি নিয়ে। মূলত কার কথায় প্র্যাকটিস প্রতিবাদ শুরু করেছিল তারকারা সেটি খতিয়ে দেখবে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
আমিরউদ্দিন ববি বলেন, “ইনভেস্টরের তরফে প্রায় ১৬ কোটির মতো টাকা খরচ করে ফেলা হয়েছে। ফলে ইনভেস্টর টাকা দিচ্ছে না, এটা সঠিক তথ্য নয়।” এ বিষয়ে ফুটবল বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি এই সমস্যা দ্রুত সমাধান না হয়, তাহলে ক্লাবের সুনাম এবং খেলোয়াড়দের মনোবল উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতি দলের পারফরম্যান্সেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা আগামীদিনে ক্লাবের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
মোহামেডান কর্তৃপক্ষ এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে সুষ্ঠু সমঝোতা এবং সমস্যা সমাধান না হলে, এটি শুধুমাত্র ক্লাবের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়িয়ে তুলবে, বরং দেশের ফুটবল অঙ্গনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা খেলার পরিবেশ এবং দেশের ফুটবল উন্নতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।