১১ জনের মৃত্যুর পর হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী জামিন, আরসিবি শিবিরে ‘স্টেট অফ ব্রীফ রিলিফ’

0

কলকাতা, ১২ জুন ২০২৫: চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন উচ্ছ্বসিত সমর্থক। আইপিএল জয়ের পরদিন উৎসবে মাততে গিয়ে বেঙ্গালুরুতে ঘটে যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সেই ঘটনার দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) চার শীর্ষ কর্তা, যার মধ্যে রয়েছেন মার্কেটিং প্রধান নিখিল সোসালেও। তবে কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে সাময়িক স্বস্তি পেলেন কোহলির টিম ম্যানেজমেন্ট—চার কর্তা পেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন জামিন। তবে শর্ত সাপেক্ষে মিলেছে সেই জামিন। আদালতের নির্দেশ, চার অভিযুক্তকেই নিজেদের পাসপোর্ট পুলিশের কাছে জমা রাখতে হবে। দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোনও অনুমতি নেই। তদন্ত চলাকালীন যেকোনও সময় পুলিশ ডাকলে, তৎক্ষণাৎ হাজিরা দিতে হবে।

আইনজীবীদের প্রশ্ন, কোনও ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করেই কীভাবে পুলিশ সরাসরি গ্রেফতার করল আরসিবির শীর্ষকর্তাদের? পাল্টা, কর্নাটক সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল শশী কিরণ শেট্টি আদালতে জানান, দলের পক্ষ থেকে রোড শোয়ের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে উল্লাসের ডাক দেওয়া হয়েছিল—যা পরে মুছে ফেলা হয়। অথচ সরকারি দপ্তরে উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়, অনুমতির কথা এড়িয়ে গিয়ে। শশীর আরও অভিযোগ, জামিন প্রাপ্তদের মধ্যে এক জন—নিখিল সোসালে, নাকি পালানোর চেষ্টা করছিলেন! তাঁকে তখনই গ্রেফতার করা হয়। বিচারপতি এসআর কৃষ্ণ কুমার এই পর্যবেক্ষণ করেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনার দায়ভার একা কারও নয়, অনেক স্তরে দায়বদ্ধতা রয়েছে।” সেই কারণেই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

৩ জুন পঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে প্রথমবার আইপিএলের শিরোপা জয় করে বেঙ্গালুরু। পরদিনই কোহলি ঘোষণা করেছিলেন, শহরে হবে বিজয় উৎসব। ভোর থেকেই হাজার হাজার সমর্থক ভিড় করতে থাকেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে। নিয়ন্ত্রণ হারায় পুলিশ, শুরু হয় লাঠিচার্জ। হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্ট হয়ে চলে যায় একের পর এক প্রাণ। এই মৃত্যু মিছিলের দায় আরসিবি ও কর্নাটক রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার ঘাড়ে চাপিয়েছে রাজ্য সরকার। তদন্ত এখনও চলছে। তবে চার কর্তার জামিন মঞ্জুরে আরসিবি শিবিরে আপাতত স্বস্তি l

রাতারাতি তৈরি হয় না চ্যাম্পিয়ন মাইন্ডসেট, তিন স্তম্ভ নেই দলে”গম্ভীরের স্পষ্ট বার্তা

কলকাতা, ১২ জুন ২০২৫: ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর ইংল্যান্ড সফরের আগে শুভমান গিলের নেতৃত্বাধীন তরুণ দলের সামনে একটি স্পষ্ট বার্তা রেখেছেন। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো তিন অভিজ্ঞ তারকার অবসরের পর দলের সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে গম্ভীর এই শূন্যতাকে দুর্বলতা নয়, বরং দেশের জন্য কিছু অসাধারণ করার সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) প্রকাশিত একটি ভিডিওতে গম্ভীরের আবেগঘন বক্তৃতা তরুণ ক্রিকেটারদের মনে নতুন উদ্দীপনা জাগিয়েছে।

ইংল্যান্ডের মাটি ভারতীয় দলের জন্য কখনোই সহজ ছিল না। এবারের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। তবে গম্ভীর দলকে দুটি পথ দেখিয়েছেন—হয় তিন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অভাবে শোক করা, নয়তো এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করা। তিনি বলেন, “এই দলের মধ্যে আমি ক্ষুধা, আবেগ আর দেশের জন্য কিছু বিশেষ করার প্রতিশ্রুতি দেখতে পাচ্ছি। যদি আমরা ত্যাগ স্বীকার করি, নিজেদের আরামের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে আসি, প্রতি সেশনে, প্রতি ঘণ্টায়, প্রতি বলে লড়াই করি, তাহলে আমরা এই সফরকে স্মরণীয় করে তুলতে পারি। আজ থেকেই শুরু করতে হবে। দেশের জন্য খেলার গৌরবের চেয়ে বড় কিছু নেই।

২০২৫ আইপিএলের মাঝপথে বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। অজিত আগারকরের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি ইংল্যান্ড সফরের দল ঘোষণার ঠিক আগে এই সিদ্ধান্ত এলেও, বিসিসিআই বা নির্বাচকদের সঙ্গে তাঁদের কী আলোচনা হয়েছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে, রবিচন্দ্রন অশ্বিন অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। ভারতীয় টেস্ট দলে তাঁর স্থান আর নিশ্চিত নয়, এই বোধ থেকেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

গম্ভীরের নেতৃত্বে এই তরুণ দল এখন ইংল্যান্ডের মাটিতে নতুন অধ্যায় লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুভমান গিলের অধিনায়কত্বে দলের সামনে সুযোগ রয়েছে নিজেদের প্রমাণ করার। গম্ভীরের বার্তা স্পষ্ট—অতীতের শূন্যতায় না ডুবে, ভবিষ্যতের সম্ভাবনায় মনোনিবেশ করতে হবে। তাঁর কথায়, “এটা শুধু ক্রিকেট নয়, দেশের গর্বের লড়াই।”এই সফর কি ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন যুগের সূচনা হবে? নাকি ইংল্যান্ডের কঠিন পরিস্থিতিতে দল হোঁচট খাবে? সময়ই তার উত্তর দেবে। তবে গম্ভীর আবেগঘন আহ্বানে একটি তথ্য স্পষ্ট—এই তরুণ দল লড়তে প্রস্তুত।