শারজাহ: শারজাহতে এই ম্যাচ হারের পর কার্যত বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে গিয়েছে ভারতের। চার ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে খাতায়-কলমে এখনও টিকে হারমানপ্রীত-স্মৃতি মান্ধানারা। তবে সোমবার নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ছিটকে যাবে। যদি পাকিস্তান বড় ব্যবধানে নিউজিল্যান্ডকে হারায়, তা হলে ভারতের ক্ষীণ একটি সুযোগ বেঁচে থাকছে। সেটা অবশ্য খুব জোরালো না।
আর পাকিস্তান খুব বড় ব্যবধানে জিতলে তারা ভারত এবং নিউজিল্যান্ড দু’জনকেই টপকে সেমিফাইনালে যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়া চার ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই সেমিফাইনালে চলে গিয়েছে। এই নিয়ে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব আসরেই কমপক্ষে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে অজি নারীরা।
টসে জিতে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ই বোঝা গিয়েছিল ভারতের কাজ সহজ হবে না। কারণ নেট রান রেট বাড়াতে গেলে কঠিন সময় পার করতে হতো ভারতকে। টসের পরেই প্রথম ধাক্কা খায় ভারত। ওয়ার্মআপের সময়ে গোড়ালি ঘুরে যায় যায় আশা শোভনার। অস্ট্রেলিয়ার অনুমতি নিয়ে তার বদলে রাধা যাদবকে প্রথম একাদশে ঢোকায় ভারত।
শুরুটা খারাপ হয়নি। প্রথম দু’ওভারে মাত্র ৯ রান ওঠে। তৃতীয় ওভারেই রেণুকা সিং পর পর দু’বলে দু’টি উইকেট নেন। চতুর্থ বলে রাধার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বেথ মুনি (২)। পরের বলেই জর্জিয়া ওয়ারহ্যাম (০) এলবিডব্লিউ হন। তবে গ্রেস হ্যারিস ছিলেন দুর্দান্ত। সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তাহলিয়া ম্যাকগ্রা ছিলেন আগ্রাসী। নবম ওভারে অরুন্ধতী রেড্ডির বলে হ্যারিসের ক্যাচ ফেলেন দীপ্তি শর্মা। তৃতীয় উইকেটের জুটি অনায়াসে ৫০ পেরিয়ে যায়। ম্যাকগ্রার ক্যাচ ফেলেন হরমানপ্রীত।১২তম ওভারে রাধা ফেরান ম্যাকগ্রাকে (৩২)। ১৪তম ওভারে হ্যারিসও (৪০) ফেরায় একটু চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। রান পাননি অ্যাশলে গার্ডনারও (৬)। অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি শেষদিকে বাড়িয়ে দেন অ্যালিস পেরি। ইনিংসের নয় বল বাকি থাকতে থাকতে পেরিকে (৩২) ফেরান দীপ্তি। শেষ বলে ছয় মেরে অস্ট্রেলিয়ার রান দেড়শো পার করেন ফিবি লিচফিল্ড।
রান রেট বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথম তিন ওভারে ভারত তুলেছে ২৫ রান। মারমুখী ছিলেন শেফালি ভার্মা। তবে চতুর্থ ওভারে বাজে শট খেলার খেসারত দিয়ে ফিরতে হয় তাকে (২০)। স্মৃতি মান্ধানা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও ১২ বলে ৬ রানের বেশি করতে পারলেন না। সপ্তম ওভারে ফেরেন জেমিমা রদ্রিগেজও।
কঠিন সময়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক হরমানপ্রীত এবং দীপ্তি শর্মা। ধীরে হলেও দু’জনে নিয়মিত ব্যবধানে রান তুলতে থাকেন। তবে ধীরগতির ইনিংসের কারণে বাড়তে থাকে আস্কিং রানরেট। আর সেটা পূরণ করতে গিয়েই বাধে বিপত্তি। ১৬তম ওভারে সোফি মোলিনিউকে ছয় মারতে গিয়ে আউট হন দীপ্তি (২৯)। পরের ওভারে রান আউট হন রিচা ঘোষ (১)।
উল্টো দিকে আর কোনও প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার না থাকায় হরমানপ্রীত একাই রান তোলার দায়িত্ব নেন। ১৯তম ওভারে অর্ধশতরান পূরণ করেন। তবে লাভ হয়নি। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১৪ রান। অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড মাত্র চার রান দেন। দু’টি উইকেট নেন। দু’টি রান আউট হয়। হরমনপ্রীত অপরাজিত থেকে যান ৫৪ রানে। ৯ রানের হারে ভারত চলে যায় বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে।