জিরো থেকে হিরো”, বিশ্ব মঞ্চে আফগান দের উত্থান , নেপথ্য ভারত!

0

শুনলে মনে হবে রুপকথা, কিন্তু আদেও তা রূপকথা নয়, কঠিন বাস্তবতা।

আফগানী দের বিশ্ব কাপ এর পারফরমেন্স অবাক করার মতোই। বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড সহ বিশ্ববিজয়ী অস্ট্রেলিয়া কেউ নিজেদের সামনে মাথানত করতে বাধ্য করেছে রশিদ, নবীরা। হয়তো বিশ্বকাপ জেতা হয়নি। সেমিফাইনালে সাউথ আফ্রিকার সাথে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে কিন্তু আফগানী খেলোয়াড়দের অদম্য লড়াই কুর্নিশ জানাতেই হয়। শক্তিশালী স্পিন অ্যাটাক ও দক্ষ পেস বিভাগ রাশিদদের শক্তি বাড়ালেও দুর্বল ব্যাটিং লাইন আপ কে হারের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদর‌‌ন ছাড়া অন্যান্য সতীর্থরা ব্যাট হাতে ব্যর্থ।

২০১৭ সালের আইসিসির পূর্ণ সময়ের জন্য সদস্যপদ লাভ করে আফগানিস্তান। সেখান থেকে আজ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। আফগানিদের লড়াই শুধু মাঠের চার গণ্ডির মধ্যে আটকে নেই মাঠের বাইরে ও তাদের বেশ কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এগোতে হয়েছে এই কয়েক বছরে। তালিবানীদের পুনরায় আগমন তালিবান শাসন প্রতিষ্ঠা লড়াই ,ত্যাগ ,বাধা বিপত্তি আর এই দুঃসময়ে যারা পাশে পেল তাদের বন্ধু ভারতকে।

ভারতের সাহায্যের কথা রশিদ, গুড়বাজ এদের মুখ বর্ণনা শুনলে তারা আন্দাজ পাওয়া যায়। বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে ২০১৫ সালে গ্রেটার নয়ডার শহীদ বিজয় সিং পাঠক স্পোর্টস কমপ্লেক্স কে আফগানিস্তানের অস্থায়ী হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ঘোষণা দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এই মাঠে আফগানিস্তান বাংলাদেশকে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে হোয়াইটওয়াশ দেয়। টেস্ট খেলা দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর ভারতের সাথে আফগানিস্তানের প্রথম টেস্ট ম্যাচ হয়, এই মাঠেই।

লালচাঁদ রাজপুত, মনোজ প্রভাকর, অজয় জাডেজার মত অভিজ্ঞ ভারতীয় প্রাক্তন খেলোয়াড়দের রাশিদদের তৈরি করার জন্য পাঠানো হয়। কিছুদিন আগের কথাই বলা যাক, আফগানিস্তানের মেন্টর ছিলেন অজয় । অজয় জাদেজা আফগানিস্তানে মেন্টর থাকাকালীন এক টাকাও নেননি, পারিশ্রমিক হিসাবে। বরং তিনি বলেছিলেন আমি পারিশ্রমিক চায়না। আমি চাই রাশিদ রা ভালো পারফরম্যান্স করুক। দল ভালো পারফরম্যান্স করুক।

তালিবানি শাসন আফগানিস্তানে থাকার কারণে খেলোয়াডার দেশের বাইরে গিয়ে প্রয়োজন মত ট্যুর করতে পারবেনা। এই বহু আফগানিস্তান প্লেয়ার বাইরের দেশ যেমন মতো দেশে গিয়ে থাকে এবং সেখান থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর গুলি সম্পন্ন করে। এক্ষেত্রে একমাত্র সম্বল বিভিন্ন দেশে হয়ে চলা ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ গুলি ও আইসিসির ফিচারস টুর গুলো। রাশিদরা নিজ মুখে স্বীকার করেছেন আইপিএলের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ গুলি খেলে ও বড় বড় খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিং রুম শেয়ার করে তাদের খেলার মান অনেক উন্নত হয়েছে।

বিশ্বকাপের পরে গ্রেটার নয়ডার এই মাঠে আফগানিদের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্যুর বাংলাদেশের সাথে। তবে একথা স্বীকার করতেই হয়, এত বাধা বিপত্তির পরে নিজ দেশের বাইরে থেকে এত কম সময় নিজেদেরকে এভাবে প্রতিষ্ঠিত করা চারটি খানি কথা নয়। ভারত শুধুমাত্র একজন সত্য বন্ধুর মতো বিপদের সময় আফগানিস্থানীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বমঞ্চে তাদের এই নির্ভীক সাহসিকতা যে পরিচয় তারা দিয়েছে তার কৃতিত্ব রাশিদ, নবীদের কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। লড়াইটা তাদের তাদেরকেই লড়তে হবে।