Home Football শনিবার মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে উত্তাল হতে পারে ময়দান

শনিবার মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে উত্তাল হতে পারে ময়দান

0

শনিবার মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে উত্তাল হতে পারে ময়দান

মোহনবাগানের আসন্ন নির্বাচন ঘিরে কি উত্তাল হতে চলেছে ময়দান? সম্ভাবনা সে দিকেই যাচ্ছে। যদি বিশেষ কোনও মহল থেকে নির্দেশ না আসে, তা হলে মোহনবাগান নির্বাচনে যুযুধান হতে চলেছে দুই গোষ্ঠী। একদিকে সচিব দেবাশিস দত্তর নেতৃত্বাধীন বর্তমান শাসক গোষ্ঠী। অন্যদিকে, মোহনবাগানের প্রাক্তন কর্তা সৃঞ্জয় বসুর নেতৃত্বে আসরে নামছে বিরোধী গোষ্ঠী। যদিও নিজেদের ‘বিরোধী’ বলতে নারাজ বসু পরিবারের বড় ছেলে। এই শিবিরের বক্তব্য, ‘আমরা সবাই মোহনবাগান।’

উত্তাপ যে বাড়ছে, তার আঁচ ময়দানে পা দিলেই পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার মোহনবাগান ক্লাবে বার্ষিক সাধারণ সভা। সেই সভা উত্তাল হতে পারে প্রশ্ন–উত্তরে। শাসক গোষ্ঠীর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। যা খবর, শনিবার নাকি মিছিল করে মোহনবাগানের সভায় যোগ দিতে যাবে সৃঞ্জয় বসুর শিবির! শনিবারই এজিএমে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হবে।বৃহস্পতিবার নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন সৃঞ্জয়রা। ময়দানে ভবানীপুর ক্লাবে সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রায় শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা সব মোহনবাগান সদস্যদের সঙ্গে কী ভাবে যোগাযোগ করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়।
বসে নেই শাসক গোষ্ঠীও। তাঁরাও সদস্যদের সঙ্গে লিয়াজো করতে নেমে পড়েছে। সদস্যদের ফোনে ভোর থেকে ‘সুপ্রভাত’ লেখা মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। তাঁদের নেতৃত্বে মোহনবাগানে কী কী কাজ হয়েছে, তার খতিয়ানও তুলে ধরা হচ্ছে। যেমন, এই জমানাতেই মোহনবাগান নামের আগে ‘এটিকে’ শব্দটাকে তোলা হয়েছে। এই ব্যাপারটা দাগ কেটেছিল সদস্য–সমর্থকদের মধ্যে। প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে।যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়, তা যে হাড্ডাহাড্ডি হবে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। হাওড়া জুড়ে মোহনবাগানের সদস্য প্রচুর। বাগানের নির্বাচনের অন্যতম অঙ্ক হল, হাওড়া লবিকে কারা কতটা দখলে রাখতে পারবেন। এর সঙ্গে টুটু বসু ফ্যাক্টর। শারীরিক কারণে পুরোপুরি সক্রিয় না হলেও তিনি আজও মোহনবাগানের প্রেসিডেন্ট। এবং আজও সদস্যদের মধ্যে ‘টুটুদা’ ম্যাজিক অনেকটাই কাজ করে। তিনি কোনদিকে থাকবেন, সেটা অবশ্যই বড় ব্যাপার।
মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত–র টিমে তিনিই প্রেসিডেন্ট। আবার সৃঞ্জয় তাঁর নিজের ছেলে। প্রকাশ্যে তিনি বলেই থাকেন, ‘দেবাশিসকে আমি খুবই ভালোবাসি।’ কিন্তু, পিতার স্নেহ আবার অন্য কথা বলতেই পারে। তিনি সৃঞ্জয়ের মাথায় হাত রাখলে অঙ্ক ঘুরলেও ঘুরতে পারে।

বেশ কয়েক বছর আগে মোহনবাগান নির্বাচন নড়িয়ে দিয়েছিল ময়দানকে। সেই সময়ে প্রয়াত অঞ্জন মিত্র বনাম বলরাম চৌধুরীর লড়াই জমে উঠেছিল। তখন প্রিয় অঞ্জনদার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছিলেন দেবাশিস–সৃঞ্জয়। সুব্রত ভট্টাচার্যের মতো মোহনবাগানের ‘ঘরের ছেলে’–কে দাঁড় করিয়েও নির্বাচনে জিততে পারেননি বলরাম গোষ্ঠী। ভবানীপুর ক্লাবে বসে নিঁখুত ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছিলেন দেবাশিস–সৃঞ্জয়রা।মজার হল, যে অঞ্জন মিত্র–র জন্য লড়েছিলেন তাঁরা, কয়েক বছর পরে সেই অঞ্জনের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ে নেমে পড়েছিলেন এই দেবাশিস–সৃঞ্জয়রাই। সচিব অঞ্জন অসুস্থ শরীরে ক্লাবে নিজের ঘরে বসে আর লনে সদস্য–সমর্থকদের নিয়ে জোর হইচইয়ের সাক্ষ্মীও থেকেছে মোহনবাগান ক্লাব। আবার, সৃঞ্জয়ের বদলে দেবাশিস দত্তকে সচিব হতেও দেখল ময়দান। এক সময়ের দুই সহযোদ্ধাই এখন লড়াইয়ের ময়দানে।

এরপরেও ময়দানের অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, শেষ পর্যন্ত ভোট হয়তো হবে না। ‘মিলিজুলি সরকার’–ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সৃঞ্জয় বসু সচিব, দেবাশিস দত্ত প্রেসিডেন্ট—এমন অঙ্কও মিলে যেতে পারে।
কী হলে কী হবে তা ভবিষ্যৎ বলবে। আপাতত চোখ শনিবার দুপুরে। তবে, মোহনবাগানের প্রয়াত সচিব অঞ্জন মিত্রর একটা উক্তি খুব জনপ্রিয় ছিল। তিনি বলতেন, ‘ময়দানে কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়।’
সেটাই যেন মিলে যাচ্ছে আজও।

Exit mobile version